প্রত্যয় ডেস্ক: করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে নতুন করে কোনও ব্যবস্থা নেয়া না হলে যুক্তরাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালান্স। তিনি বলেছেন, আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাজ্য করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের মুখোমুখি হতে পারে। প্যাট্রিক ভ্যালান্স বলেছেন, আগামী নভেম্বরে যুক্তরাজ্যে করোনায় দৈনিক মৃত্যু প্রায় ২০০ জনে পৌছাতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ইংল্যান্ডে করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হবে কিনা সেবিষয়ে বিবেচনা করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এর মাঝেই দেশটির সরকারি প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা করোনার সম্ভাব্য নতুন প্রাদুর্ভাবের ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। রোববারও যুক্তরাজ্যে করোনায় আরও ৩ হাজার ৮৯৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১৮ জন।
১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে সংবাদ সম্মেলনে স্যার প্যাট্রিক জোর দিয়ে বলেছেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ের দিকে করোনার সম্ভাব্য প্রকোপের ব্যাপারে যে চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে; সেটি শুধু ভবিষ্যদ্বাণী নয়। বর্তমানে প্রতি সাতদিনে করোনা রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে। তিনি বলেছেন, যদি এটা মোকাবিলা করা না যায় এবং প্রত্যেক সাতদিনে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে শেষ পর্যন্ত অক্টোবরের মাঝের দিকে দৈনিক আক্রান্ত ৫০ হাজারের মতো হতে পারে।
আবার লকডাউনের ঘোষণা: করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে বার ও রেস্তোরাঁ খোলা রাখার বিষয়ে নতুন বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পারে ব্রিটেন। একই সঙ্গে পরিস্থিতি বিবেচনায় ঘরে থেকে কাজ করার নিয়ম আবার চালু হচ্ছে দেশটিতে।
পার্লামেন্টে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এসব বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানানোর কথা রয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন তিনি। গত মার্চে দেশটিতে আরোপিত লকডাউনের ব্যাপারেও আলোচনা করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ভাষণের কপি ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট। এতে বরিস জনসন বলছেন, আমরা জানি এটা সহজ হবে না। কিন্তু ভাইরাসের পুনরুত্থান নিয়ন্ত্রণ ও জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা রক্ষার জন্য আমাদের আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এর আগে সোমবার ব্রিটেনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দেশটিতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় ভাইরাসের প্রকোপ ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করে দেন। তার এই সতর্কবার্তার পর নতুন বিধি-নিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। গত এক সপ্তাহের তথ্য বলছে, প্রায় প্রত্যেকদিন ব্রিটেনে ৬ হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া হাসপাতালে রোগী ভর্তির পরিমাণ প্রত্যেক ৮দিনে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। করোনা পরীক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছে।
কর্মস্থলে ফেরার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে না এমন কর্মক্ষেত্রের লোকজনকে জনসন আবারও ঘরে থেকে কাজ করার আহ্বান জানাবেন বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে। এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবার থেকে রাত ১০টার পর ইংল্যান্ডের সব পাব, বার, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য আতিথেয়তা স্থাপনা বন্ধ রাখার নিয়ম কার্যকর হবে।